Skip to main content
 

আমাদের কথা

ঝিনুকদহ থেকে ঝিনাইদহ

বর্তমান ঝিনাইদহ অঞ্চলটি মূলত যশোর জেলার একটি মহকুমা ছিল। ১৮৬২ সালে ঝিনাইদহ অঞ্চল মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ১৯৮৪ সালে ঝিনাইদহ একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। কথিত আছে যে এক সময় ঝিনাইদহের ‘নবগঙ্গা’ নদী ক্যালসিয়াম উৎপাদনের উপকরণ ঝিনুক সংগ্রহের অত্যন্ত উপযোগী স্থান ছিল এবং দূর-দুরান্ত থেকে বিশেষ করে কলকাতার ব্যবসায়ীরা এখানে ঝিনুক সংগ্রহের জন্য আসতো এবং সে সময় ঝিনুক প্রাপ্তির এই অঞ্চলটি ঝিনুকদহ নামে পরিচিত ছিল। অনেকের মতে ‘ঝিনুক’ এর আঞ্চলিক শব্দ ‘ঝিনাই’ এবং বৃহৎ ও গভীর ‘জলাশয়’ এর ফার্সি পারিভাষিক শব্দ ‘দহ’ এর সংযোগেই এ অঞ্চল ‘ঝিনাইদহ’ নামে পরিচিতি পায়।

ঝিনাইদহের আদালত

ঝিনাইদহকে ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে রূপ দেয়া হলে ১৯৮৫ সালেই ঝিনাইদহতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পূর্বে এ অঞ্চল যশোর জেলার অধীনে থাকা অবস্থায় যশোর জেলা জজ আদালতের অধীনে ঝিনাইদহে একটি সাব-জজ আদালত ও একটি মুন্সেফ আদালত ছিল। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঝিনাইদহের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ছিল ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রের সন্নিকটে নবগঙ্গা নদীর পাড়ে। কিন্তু কালক্রমে জনসংখ্যাবৃদ্ধি, শহরের সাথে মানুষের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ও মানুষের শহরমূখী হওয়া ইত্যাদি নানা কারণে বাংলাদেশ সরকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ সহ সরকারের প্রধান প্রধান কার্যালয়গুলি নতুন শহর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহরের অনতিদূরে পশ্চিম পাশে নতুনভাবে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক জেলা ও দায়রা জজ আদালত নতুন করে শহরের কোলাহল ছেড়ে শহরের কাছেই গয়েশপুর মৌজায় স্থাপিত হয়।

ঝিনাইদহের বিচারকবৃন্দ

এই জেলায় প্রথম জেলা ও দায়রা জজ পদ অলঙ্কৃত করেন জনাব মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী যিনি ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত এই জেলায় জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে তাঁর কর্মকাল অতিবাহিত করেন। একাধিক বিজ্ঞ বিচারক আছেন যারা এই জেলায় কর্মরত ছিলেন ও পরবর্তীতে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট এর বিচারিক পদ অলঙ্কৃত করেছেন। বিচার বিভাগের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষের আকর্ষন অনন্য। বর্তমানে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচারক সংখ্যা এই জেলার বাসিন্দা সর্বাধিক।

ঝিনাইদহের আদালত সমূহ

ঝিনাইদহে ১৯৮৫ সালে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হবার পরবর্তীতে বিচার বিভাগ এর পৃথকীকরণ এর পর ২০০৭ সালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেসীর কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের দক্ষিন পাশে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন হিসেবে একটি বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে। ঝিনাইদহ শহর থেকে পশ্চিম দিকে প্রধান সড়ক হয়ে যেতে রাস্তার বাম হাতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন অবস্থিত। এখানে আদালতের উত্তরে ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরগামী মহাসড়ক, দক্ষিনে ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতি, পূর্বে জেলা প্রশাসন ও পশ্চিমে পুলিশ সুপার এর কার্যালয় রয়েছে। কয়েক একর জমির ওপর ঝিনাইদহের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন প্রতিষ্ঠিত।